🌎

স্পেনে ভয়ঙ্কর ষাঁড়ের দৌড়! শতাব্দীর প্রাচীন উৎসবে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে অংশ নিলেন দুঃসাহসীরা

পাম্পলোনা, স্পেন - স্পেনের পাম্পলোনায় শতাব্দীর প্রাচীন সান Fermin উৎসবে ভয়ঙ্কর ষাঁড়ের দৌড় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উৎসবে হাজার হাজার মানুষ প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে অংশ নিয়েছেন।


প্রতি বছর, পাম্পলোনার রাস্তায় ৯ দিনের এই উৎসবে, দুঃসাহসীরা ষাঁড়ের তাড়া খেয়ে দৌড়ান। ষাঁড়ের ধারালো শিংয়ের আঘাত থেকে বাঁচতে পারলেই যেন জীবনের জয়। কিন্তু কেন মানুষ এমন ভয়ংকর খেলায় অংশ নেয়?


দেখা যায়, শুধুমাত্র রোমাঞ্চ নয়, এর পেছনে রয়েছে গভীর ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি। আমিরা ও রজার নামের দুই ব্যক্তি জানান, তারা এই দৌড়ে অংশ নিতে পেরে গর্বিত। তাদের মতে, ষাঁড়ের সঙ্গে দৌড়ানো এক বিশেষ অনুভূতি, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।




তবে, এই দৌড় অত্যন্ত বিপজ্জনক। প্রতি বছর বহু মানুষ আহত হন, এমনকি কারো কারো মৃত্যুও হয়। ২০০৯ সালে সর্বশেষ একজনের মৃত্যু হয়েছিল। এই বছরও প্রায় ৪৯ জন আহত হয়েছেন। ষাঁড়ের তাড়া খেয়ে পড়ে গেলে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে।


বিল কানিংহাম নামের একজন আমেরিকান ২০ বছর ধরে এই উৎসবে আসছেন এবং নতুন অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ দেন। তিনি জানান, ষাঁড়গুলো খুবই শক্তিশালী এবং বিপজ্জনক হতে পারে। বিশেষ করে যে ষাঁড়গুলো দলছুট হয়ে যায়, সেগুলো আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়।


এই উৎসবটি মূলত সেন্ট Fermin নামক স্থানীয় অঞ্চলের পৃষ্ঠপোষক সাধুকে সম্মান জানানোর জন্য একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। তবে, পশু অধিকার কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে এই প্রথার বিরোধিতা করে আসছেন। তাদের মতে, এটি নিষ্ঠুর এবং বন্ধ করা উচিত। PETA-র দাবি, সপ্তাহব্যাপী এই উৎসবে প্রায় ৬০টি ষাঁড় মারা হয়।


উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা লাল ও সাদা পোশাকে সজ্জিত হয়ে ষাঁড়ের সামনে দৌড়ান। দৌড়ের শেষে ষাঁড়গুলোকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক চলতেই থাকে, তবে ঐতিহ্য আর রোমাঞ্চের টানে প্রতি বছর বহু মানুষ এখানে আসেন।



সান Fermin উৎসবটি কখন অনুষ্ঠিত হয়?


এই উৎসবটি প্রতি বছর ৬ জুলাই শুরু হয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত চলে। স্পেনের পাম্পলোনা শহরে এই নয় দিন ধরে এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। ৬ জুলাই দুপুর বেলা পাম্পলোনার সিটি হলের বারান্দা থেকে 'এল চ্যুপিনাজো' নামক একটি রকেট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হয়। এরপর প্রতিদিন সকালে ষাঁড়ের দৌড় অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৪ জুলাই রাতে সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এই সময়ে পাম্পলোনার স্থানীয় বাসিন্দারা এবং পর্যটকেরা ঐতিহ্যবাহী পোশাকে শহরটিকে এক ভিন্ন রূপে সাজিয়ে তোলেন।