মো: আবদুল কাদের,বিশেষ প্রতিনিধি:
মরনব্যাধী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে মাঠ পর্যায়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ধরণের প্রদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। এ সময় জনসাধারণকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। লোকজনের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে এবং জনগণকে সচেতন করতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলা চষে বেড়াচ্ছেন রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরীন চৌধুরী।
কিন্তু খেটে খাওয়া কিছু মানুষ সরকারের নির্দেশনা ভেদ করে রাস্তায় নেমে পড়েন। ওই সব মানুষের রাস্তায় নামার কারণ খুঁজে বের করে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এ নারী ইউএনও। তাই আইন প্রয়োগে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার আগে রাস্তায় নামা নিন্ম আয়ের মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী। এরা যেন পেট চালানোর দোহাই দিয়ে রাস্তায় বের হয়ে সরকারের আইন ভঙ্গ না করে।
শনিবার উপজেলার বামনী ও কেরোয়া ইউনিয়নের ১১৫টি দরিদ্র পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করলেন তিনি। গ্রামীন জনপদের এসব হতদরিদ্রদের মাঝে পর্যায়ক্রমে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে বলে ঘোষণা দেন। এর আগেও উপজেলার বিভিন্নস্থানে এসব খেটে খাওয়া মানুষের হাতে খাদ্য তুলে দিয়েছেন তিনি।
‘‘অভিযান চলাকালীন একটি বিষয় চোখে পড়ে, যে পান ওয়ালা, সবজিওয়ালা, ভ্যানওয়ালা এতো নিষেধাজ্ঞার পরও আইন মানছে না, সে কি শুধু পেটের দায়ে রাস্তায় নাকি সচেতনতার অভাবে কিংবা স্বভাব দোষে? চোখে পড়লো একজন বৃদ্ধ ভ্যানওয়ালাকে (কাপড় বিক্রি করছিল) যে কিনা শুধু পেটের দায়ে রাস্তায় বেরিয়েছে রাতে কিন্তু রাস্তায় তার কাপড় কেনার এত লোক কোথায়? দেখা মিলল এক ভিক্ষুকের অথচ তাকে ভিক্ষা দেয়ার লোক কোথায়? মোড়ে মোড়ে খালি রিক্সা দাঁড়িয়ে প্যাসেঞ্জার এর আশায়, প্যাসেঞ্জার কোথায়? রিক্সাওয়ালা খোঁজে প্যাসেঞ্জার আর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঘরের বাইরে বের হওয়া অসচেতন কিছু প্যাসেঞ্জার খোঁজে খালি রিক্সা বা অটো। অসচেতন সেই আম-জনতাকে প্রতিদিনই সচেতন করার অভিপ্রায়ে বলা হয় ” ঘরে ফিরে যান, নিরাপদ থাকুন”।
প্রতিদিনের ন্যায় খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে শুধু আইনের শাসন না দেখিয়ে আজ হাতে তুলে দেই চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্য যেন আগামী কয়েকটা দিন তার পেটের দায়ে রাস্তায় না বের হতে হয়। পাশাপাশি তার নাম-ঠিকানা ও ছবি তুলে রাখা হয় যেন আগামীকাল আবার শুনতে না হয়, “আমি পেটের দায়ে আজকে প্রথম বের হয়েছি”।
তিনি বলেন, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে অনেক সময় কঠোর হতে হয়, আর এই কঠোরতায় যদি একটি পরিবার, সমাজ, গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগ সর্বোপরি একটি দেশের, একটি জাতির জন্য মঙ্গলদায়ক হয়, তবে সেই কঠোরতাই শ্রেয়। রায়পুরকে করোনামুক্ত করতে প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছি শুধু একটিমাত্র বিশ্বাস নিয়ে যে, আমাদের এই কঠোরতায় জনগণ একটু সচেতন হবে। আর তাই প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ/নিয়ন্ত্রণে, জনসমাগম এড়াতে, চায়ের দোকানের আড্ডা বন্ধ করতে, খাবারের হোটেলগুলো মনিটরিংসহ সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে আজ সন্ধ্যায় পুনরায় রায়পুর পৌর শহর এবং সোনাপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়।’
পৃথক আরেকটি পোষ্টে তিনি বলেন, ‘একজন বঙ্গবন্ধুর উদ্দাত্ত আহবানে একটি তর্জনীর নির্দেশে একদিন যেভাবে আম-জনতা এক হয়ে ছিনিয়ে নিয়ে এসেছিল এদেশের মানচিত্র, লাল সবুজের পতাকাকে….ঠিক তেমনই এক সংকটময় সময় (অজানা এক করোনা ভাইরাস যা এই রাস্ট্র, এ জাতিকে নীরবে নিভৃতে দমন করতে বদ্ধপরিকর) বঙ্গবন্ধু-কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে ও নির্দেশনায় এক হয়ে লড়তে চাই করোনার বিরুদ্ধে, মুক্ত করতে চাই প্রিয় মাতৃভূমিকে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং সহযোগিতায়।
সচেতন হওয়া এবং ঘরে থাকার আহবানের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু-কন্যা আজ অসহায়, ছিন্নমূল, খেটে খাওয়া দিনমজুর, হতদরিদ্রদের দ্বারে দ্বারে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আর তাই জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক সরকারের এই বরাদ্দ নিষ্ঠার সাথে সকল অসহায় ও ছিন্নমূল, ভাসমান হতদরিদ্রদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার প্রত্যয়ে ছুটে যাই ৬নং কেরোয়া এবং ৭নং বামনী ইউনিয়নে জনসমাগম এড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ১১৫ টি পরিবারের মাঝে আজ ত্রাণ বিতরণ করা হয়। অসহায়, ছিন্নমূল ও ভাসমান হতদরিদ্রদের দ্বারে দ্বারে ত্রাণ বিতরণের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
ঢাকা, বাংলাদেশ। শনিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২১ | |
ওয়াক্ত | সময় |
সুবহে সাদিক | ভোর ৫:২৩ |
সূর্যোদয় | ভোর ৬:৪৩ |
যোহর | দুপুর ১২:০৮ |
আছর | বিকাল ৩:৫৮ |
মাগরিব | সন্ধ্যা ৫:৩৪ |
এশা | রাত ৬:৫৩ |
About Us Contact Privacy & Policy DMCA Sitemap
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত | সেরা নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম - ২০১৮