">
রাজবাড়ী- কুষ্টিয়া মহা সড়কের চরম অব্যাবস্থাপনা ও সড়ক ও জনপদ বিভাগের অবহেলা অবজ্ঞায় কুষ্টিয়া জেলার সকল মহাসড়ক গুলো খানা খন্দে’র কারনে ব্যবহারের একেবারেই অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কুষ্টিয়া–রাজবাড়ী মহাসড়কে ৫০ কিঃমিঃ খানা খন্দে যানবাহন চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ও কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী রাস্তা খানাখন্দে ভরে গেছে। প্রতি দিনে প্রায় ১২ হাজার যানবাহন ঝুকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছে।
রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কটি গোয়ালন্দ মোড় থেকে পাংশা পর্যন্ত ফোর লেনে উন্নীত করণপ্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে প্রায় পাঁচ মাস আগে যে কাজ চারটি ভাগে দুুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ২ টি হলো মীর আক্তার কনস্ট্রাকশন এবং অহিদ কনস্ট্রাকশন লি:। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে এই সড়কের কাজের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা চলে আসছিল বিভিন্ন মহলে। যে কারনে শনিবার সকালে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসনের উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় ওই দুই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে জেলার কর্নধারদের সামনে উপস্থিত থাকতে বলা হয়।
জানতে চাওয়া হয় ৩ শত ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কটি গোয়ালন্দ মোড় থেকে পাংশা পর্যন্ত ফোর লেনে উন্নীত করন প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়ে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার কনস্ট্রাকশনের প্রতিনিধি মুহম্মদ আরজু বলেন, গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ীর জেলা পরিষদ পর্ষন্ত ফোর লেনের কাজের কার্যাদেশ প্রদান করা হয় গত বছরের অক্টোবর মাসের ৪ তারিখে দেড় বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। এরই মধ্যে তাদের ২৬ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই কাজের সিংহভাগ শেষ হবে।
এবং রাজবাড়ীর জেলা পরিষদের সামনে থেকে পাংশা পর্যন্ত ফোরলেনের উন্নীত করার কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অহিদ কনস্ট্রাকশন যার প্রতিনিধি হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার আমজাদ হোসেন জানান, এই কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয় গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর। কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি জানান, কাজ শুরু করা হয়েছে। এই সড়কের পাশে থাকা গাছ সরিয়ে নিতে বলা হলেও এখনও সড়কের পাশে কিছু গাছ রয়েছে যে কারনে পুরোদমে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। তাছারা সড়কের পাশে রয়েছে বিদ্যুতের খুটি যে কারনে এত বড় প্রকল্পের শুরু করতে ব্যাঘাত ঘটছে। সেই সাথে তিনি আরো জানান, রাজবাড়ী পৌরসভার মধ্যে যে অংশ রয়েছে সে অংশে রাস্তার দুই পাশে পানির পাইপ লাইন থাকায় কাজ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া এই সড়কে কোন প্রকার বাঁধা ছাড়া চলছে ১০ চাকার বালু বোঝাই ট্রাক এই ট্রাকগুলোর চলাচল বন্ধ না করলে কাজ করা সম্ভব হবে না।
এ সময় পাংশা পৌরসভার মেয়র আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, রাজবাড়ী কুষ্টিয়া রুট ব্যবহার করে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প তৈরির বালু এবং পাথর পরিবহন করা হয়। যে কারনে এই রাস্তায় বালু এবং পাথর বোঝাই করা ট্রাক চলাচলে বাঁধা দেওয়া যাবে না বলে জানান তিনি। এর ফলে দক্ষিনাঞ্চলের উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটবে।
রাজবাড়ীর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.জহিরুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অহিদ কনস্ট্রাকশনের ইঞ্জিনিয়ার আমজাদ হোসেন যে অভিযোগ করেছে তা পুরোপুরি ঠিক না। কারন সড়কের পাশে থাকা গাছ সড়ানোর ব্যপারে বন বিভাগ তাদের টেন্ডার সম্পন্ন করেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের যে সব নারিকেল, সুপারি ও তাল গাছ আছে সে ব্যপারে আরবারি কালচার বিভাগের প্রকৌশলীর সাথে কথা হয়েছে তারা জানিয়েছেন ওই গাছ কাটতে যে টাকা খরচ হবে বিক্রি করে সে টাকা পাওয়া যাবে না। তাই তারা গাছগুলোকে মুল্যহীন দেখিয়ে স্থানীয়দের সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।
এ ব্যপারে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, রাজবাড়ীর মানুষের দুর্ভোগ, চলাচলের দুর্দশার কথা চিন্তা করে সরকার রাজবাড়ীতে কুষ্টিয়া মহা সড়কের বড় একটি প্রকল্প শুরু করেছে। যে কাজ সর্ম্পকে সব সময় খোঁজ খবর নিচ্ছেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও মাননীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী। এই কাজের দেখভাল করার দ্বায়িত্ব আমাদের তাই কোন প্রকার অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। অজুহাত আর অভিযোগ না করে দ্রত গতিতে কাজের মান রক্ষা করে কাজ করুন। আপনারা মনে রাখবেন আপনাদের ভুলের কারনে সরকারের বদনাম যেন না হয়। বর্ষা মৌসুম আসলে কিন্তুু কাজের মান ভাল হয়না মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ বাড়ে তাই বর্ষা মৌসুমের আগে কাজের সিংহ ভাগ শেষ করতে হবে।
কুষ্টিয়া বাস মালিক সমিতি ও সড়ক ও জনপদ বিভাগের তথ্য মোতাবেক দেশের উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের ৩২টি জেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যমটি হলো কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ-ঈশ্বরদী, কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী-ঢাকা সড়ক। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে এই মহা সড়কে শুধু বড় বড় খানা খন্দ ও গর্তে ভরে গেছে। বিশেষ করে কুষ্টিয়া শহরের বারখাদা ত্রিমোহনী থেকে শুরু করে ভেড়ামারা বারমাইল পর্যন্ত এবং শহরের মজমপুর গেট থেকে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত, চৌড়হাস থেকে কুষ্টিয়ার খোকসা সীমান্ত (শিয়ালডাঙ্গী) পর্যন্ত খানাখন্দে ভরা রাস্তা গুলো। এসকল এলাকার সড়কের বেশির ভাগ জায়গায় কার্পেটিং উঠে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে। তার উপরে পদ্মা সেতু নির্মাণের সকল সরঞ্জামাদি ও পাথর এ রাস্তাতে বহন করায় একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছে। এদিকে সড়ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্রে থেকে জানা গেছে, গত ২ বছরে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ-ঈশ্বরদী সড়কে সংস্কারের নামে ২৫ কোটি টাকা ব্যায় হয়েছে। সর্বশেষ গত কয়েক মাস আগেও এটির সংস্কার কাজ করা হয়। এছাড়াও আপদ কালীন অবস্থায় জরুরী মেরামত কাজ লেগেই আছে। একদিকে যেমন সরকারী টাকার গচ্ছা যাচ্ছে অপরদিকে সড়ক মেরামতের নামে হরিলুট হচ্ছে সরকারী টাকা। সাধারনের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌছে গেছে। ঝুকি নিয়ে চলছে গাড়ী। মূল্যবান জীবন ক্ষয় হচ্ছে প্রায়শ।
About Us Contact Privacy & Policy DMCA Sitemap
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত | সেরা নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম -২০১৮